ঢাকা,বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

১০ ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী

চকরিয়ায় নৌকার ভরাডুবির আশঙ্কায নেতা-কর্মীরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এসব বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীরা। তারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। এভাবে বিদ্রোহীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে নৌকার ভরাডুবির আশঙ্কা করছেনর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। কৈয়ারবিল ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীকে জেতাতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেছে।
স্থানীয় সাংসদের আশকারায় বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানান চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার আলম।
তিনি বলেন, চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন চলছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি ইউনিয়নে দলের ক্লিন ইমেইজের প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক মনোনয়ন দিয়েছেন। দল থেকে যারা মনোনয়ন চেয়ে পাননি তারাও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। অনেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র র্প্রার্থীও রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ জাফর আলমের আশকারায় এসব প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ থেকে সরছে না। গত ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া এক বিদ্রোহী প্রার্থীর জনসভায় তিনি বক্তব্য রেখেছেন। সেজন্য নির্বাচনে অংশ নেয়া বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে অবস্থান করায় দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন ভুমিকা না থাকায় অনেকের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নৌকাকে বিজয় করতে কাজও করছে না। আওয়ামী লীগের অনেক প্রার্থী হালে পানি পাচ্ছে না।
বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে কামরুজ্জামান সোহেল, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে আফজালুর রহমান চৌধুরী, পশ্চিমবড় ভেওলায় রবিউল এহেছান, কোনাখালীতে দিদারুল হক সিকদার, লক্ষ্যারচরে মো. সাইকুল ইসলাম, কাকারা ইউনিয়নে মো. শাহাবউদ্দিন ও বদরখালীতে মোহাম্মদ আলী। অপর তিন ইউনিয়ন সাহারবিল, ঢেমুশিয়া ও বিএমচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী প্রার্থী থাকলেও ২-৩ জন করে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে।
এদিকে নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও বিদ্রোহীদের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
কৈয়ারবিল ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের নারী প্রার্থী জন্নাতুল বকেয়া রেখা অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কিছু নেতা শুরুতে থাকলেও এখন বিএনপি ঘরনার বিদ্রোহী প্রার্থী আফজালুর রহমানের পক্ষে দিনরাত নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ করছেন। বর্তমানে নৌকার পক্ষে তাদের প্রচার প্রচারণায় পাওয়া যাচ্ছে না। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চশমা প্রতীকের পক্ষে প্রচার প্রচারণা করছেন।

কৈয়ারবিল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, বিএনপি নেতা আফজালুর রহমানকে বিজয় করার জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একাট্রা হয়েছেন। স¤প্রতি জামায়াত সমর্থিত চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফুর রহমান মানিক, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজাহান চৌধুরী, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ও বিদ্রোহী প্রার্থী আফজালুর রহমান একাধিক বৈঠক করেছেন। ইতোমধ্যে বৈঠকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
অপরদিকে পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ফারহানা আফরিন মুন্না অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নৌকা দিলেও বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান সোহেল এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। আমি জেলা-উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, যারা নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ চিঠিও দিয়েছেন। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ বসে দুয়েকদিনের সিদ্বান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। আগামী ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে চকরিয়া উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে।

পাঠকের মতামত: